সরকারি দলের নেতারা বলছেন, মানুষকেও বাঁচাতে হবে, অর্থনীতির চাকাও সচল রাখতে হবে। এ ধারণা থেকে নভেল করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সাধারণ ছুটি পরিহার করার পথে যেতে চায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। সাধারণ ছুটি আরো দীর্ঘমেয়াদি হলে অর্থনীতির ওপর দারুণভাবে প্রভাব পড়বে। তাই সবকিছু থামিয়ে দিয়ে আর বেশিদিন থাকতে চাচ্ছে না সরকার। এরই মধ্যে সরকার সীমিত আকারে বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান, পোশাক কারখানাও খুলে দিয়েছে। ঈদকে সামনে রেখে খোলা হচ্ছে দোকানপাটও।
Vacation for Coronavirus notice |
সরকারের একজন মন্ত্রী বলেন, সাধারণ ছুটি বা লকডাউন দিয়ে লাগাম টানা সম্ভব হচ্ছে না নভেল করোনাভাইরাসের। আবার সাধারণ জনগণকেও ঘরে আটকে রাখা যাচ্ছে না। অন্যদিকে বিশ্বের অন্য দেশগুলোও এখন লকডাউনের বিকল্প ভাবতে শুরু করেছে। উন্নত দেশগুলোও অর্থনীতির হুমকির কথা ভাবতে শুরু করেছে। সেই চিন্তা থেকেই ইতালি, স্পেনসহ কিছু দেশ এরই মধ্যে লকডাউন শিথিলও করেছে। নভেল করোনাভাইরাস মোকাবেলায় এখনো কোনো ভ্যাকসিন আবিষ্কার সম্ভব হয়নি। ফলে এ দুর্যোগ আমাদের আরো ভোগাবে। এ পরিস্থিতিতে সরকারকে করোনা মোকাবেলায় নতুন কিছু ভাবতে হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর একজন সদস্য বলেন, নভেল করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সাধারণ ছুটি বা লকডাউনের বিকল্প পদ্ধতি কী হতে পারে—সে প্রক্রিয়া নিয়ে ভাবছে সরকার। মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে অভ্যস্ত হতে হবে। সচেতন, সতর্কভাবে স্বাভাবিক কাজে নিশ্চয়ই ফিরতে হবে। তিনি বলেন, পৃথিবী থেকে নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কখন বিদায় নেবে সেটা নিয়ে সন্দেহ আছে। কারণ এখনো এর কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। কয়েকটা আবিষ্কারের কথা বললেও সেটার এখন পর্যন্ত কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই। বিগত শতাব্দীতে যে স্প্যানিশ ফ্লু মহামারীর প্রতিষেধক আবিষ্কার হতে প্রায় ১০ বছরের মতো সময় লেগেছিল। এখন বিজ্ঞান এগিয়ে গেছে, তাই হয়তো কম সময় লাগবে। কিন্তু আমাদের তো থেমে থাকলে চলবে না। সচেতন হয়ে সবাইকে নিজের কাজ করতে হবে। জীবন-জীবিকা চালু রাখতে হবে।
সরকারের আরেকজন মন্ত্রী বলেন, নভেল করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত এর ভয়াবহতা কম-বেশি থাকবে। ততদিন মানুষকে ঘরে বসিয়ে রাখা যাবে না। ফলে সরকারকে ভাবতে হচ্ছে বিকল্প উপায়। আপাতত স্বাস্থ্যবিধি মানা, সতর্কতা অবলম্বন করে মানুষকে
চলতে অভ্যস্ত করে তুলতে হবে। এজন্য টেলিভিশন, বেতারসহ সব গণমাধ্যমে সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান বেশি প্রচার করা হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে প্রয়োজনে বাধ্য করার প্রক্রিয়াও শুরু করা হতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে সঙ্গরোধ করে রাখা অব্যাহত থাকবে। মানুষকে আটকে রেখে নভেল করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কোনোভাবেই সম্ভব নয়। পুষ্টিমান নিশ্চিত করে খাবার গ্রহণের বিষয়ও প্রচার করা হবে সরকারের পক্ষ থেকে।
তিনি বলেন, আমি মনে করি আগামী দুই থেকে তিন বছর পৃথিবীতে স্বাভাবিক জীবনযাপন হবে না। মানুষ বের হবে মাস্ক পরে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখবে। সবাইকে অ্যাডজাস্টমেন্ট করে চলতে হবে। এখন আমাদের প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে জীবনকে আরো সহজ করতে হবে। এরই মধ্যে আমাদের চলতে হবে, অগ্রসর হতে হবে। অর্থনৈতিক কমকাণ্ড চালু করতে হবে।
সুত্রঃ দৈনিক শিক্ষা