গত মার্চ মাসের শুরুতে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শেষ হল হলেও দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় ফল প্রকাশ করতে দেরি হয়। গত ১০ মে থেকে একাদশে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরুর ঘোষণা দিয়ে ভর্তি নীতিমালা জারি করা হলেও নির্ধারিত সময়ে ফল প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। গত ৩১ মে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়।
XI Admission |
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, আগের প্রকাশিত নীতিমালা অনুসারে আগামী ৯ আগস্ট থেকে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের http://www.xiclassadmission.gov.bd থেকে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। আর নগদ, সোনালী ব্যাংক, টেলিটক, বিকাশ, শিওর ক্যাশ এবং রকেটের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করা যাবে।
সূত্র আরও জানায়, একজন শিক্ষার্থীকে কমপক্ষে ৫টি কলেজে পছন্দক্রম অনুসারে আবেদন করতে হবে। তবে সর্বোচ্চ ১০টি কলেজে পছন্দক্রম অনুসারে আবেদন করতে পারবে। মেধা এবং পছন্দক্রম অনুসারে নির্দিষ্ট কলেজে ভর্তির জন্য মনোনীত করা হবে। একাদশে ভরির্তর জন্য সব শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক, সংশ্লিষ্ট অপারেটরকে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে ভর্তি কার্যক্রম শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
একাদশ শ্রেণিতে এইচএসসি ও আলিম শিক্ষার্থীদের ভর্তির পুনঃনির্ধারিত সময়সূচি প্রকাশ করে শিক্ষা বোর্ডগুলো। পুনঃনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, ভর্তির জন্য ১ম দফায় অনলাইনে আবেদন গ্রহণ করা হবে ৯ আগস্ট থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত। তবে, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে অনলাইন সার্ভিস ও কল সেন্টার বন্ধ থাকবে। প্রথম পর্যায়ে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করা হবে ২৫ আগস্ট রাত ৮টায়।
শিক্ষার্থীদের সিলেকশন নিশ্চায়ন করতে হবে ২৬ আগস্ট থেকে ৩০ আগস্ট রাত ৮টা পর্যন্ত। শিক্ষার্থী সিলেকশন নিশ্চায়ন না করলে ১ম পর্যায়ের সিলেকশন এবং আবেদন বাতিল হবে।
দ্বিতীয় পর্যায়ে আবেদন গ্রহণ ৩১ আগস্ট থেকে চলবে ২ সেপ্টেম্বর রাত ৮টা পর্যন্ত। পছন্দক্রম অনুসারে ১ম মাইগ্রেশনের ফল প্রকাশ হবে ৪ সেপ্টেম্বর রাত ৮টায়। আর দ্বিতীয় পর্যায়ের আবদনের ফল প্রকাশ হবে একই দিন (৪ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টাতেই।
দ্বিতীয় পর্যায়ের শিক্ষার্থেীদের সিলেকশন নিশ্চায়ন ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত। শিক্ষার্থী সিলেকশন নিশ্চায়ন না করলে ২য় পর্যায়ের সিলেকশন এবং আবেদন বাতিল হবে।
তৃতীয় পর্যায়ের আবেদন গ্রহণ চলবে ৭ ও ৮ সেপ্টেম্বর। পপছন্দক্রম অনুযায়ী ২য় মাইগ্রেশনের ফল এবং ৩য় পর্যায়ের আবেদনের ফল প্রকাশ হবে ১০ সেপ্টেম্বর রাত ৮টায়।
তৃতীয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীর সিলেকশন নিশ্চায়ন করতে হবে ১১ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ সেপ্টেম্বর রাত ৮টা পর্যন্ত। সিলেকশন নিশ্চায়ন না করলে আবেদন বাতিল বলে গণ্য হবে আর কলেজভিত্তিক চূড়ান্ত ফল প্রকাশ হবে ১৩ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায়। ভর্তি চলবে ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
জানা গেছে, এ বছর একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিতে মুক্তিযোদ্ধা, প্রবাসী ও বিকেএসপি কোটা বহাল থাকছে। তবে, অন্যান্য কোটা নিয়ে নীতিমালায় কোনো কিছু উল্লেখ করা হয়নি। ভর্তি প্রক্রিয়ায় জটিলতা ও ব্যয় কমাতে এসএমএসের মাধ্যমে আবেদন প্রক্রিয়া বাতিল করা হয়েছে। শুধু অনলাইনে সর্বোচ্চ ১০টি প্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা।
একাদশে বিশেষ কোটা হিসেবে ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা, দশমিক পাঁচ শতাংশ বিকেএসপি এবং দশমিক পাঁচ শতাংশ প্রবাসী কোটা বহাল থাকছে। প্রবাসীদের সন্তান ভর্তির বিষয়ে সরাসরি বোর্ডে আবেদন করতে হবে।
এবার ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার এমপিওভুক্ত কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ হাজার টাকা। এছাড়া ঢাকার মধ্যে আংশিক এমপিওভুক্ত ও এমপিওবিহীন প্রতিষ্ঠানের বাংলা মাধ্যম ভর্তির জন্য ৯ হাজার ও ইংরেজি মাধ্যমের ভর্তি ফি ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হবে। সব প্রতিষ্ঠানের জন্য উন্নয়ন ফি ৩ হাজার টাকার বেশি করা যাবে না। প্রতিটি খাতে অর্থ আদায়ের ক্ষেত্রে রসিদ প্রদানের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া মফস্বল ও পৌর এলাকার জন্য ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার টাকা, পৌর জেলা সদরে ২ হাজার টাকা, ঢাকা ব্যতীত অন্যান্য মেট্রোপলিটন এলাকায় ৩ হাজার টাকার বেশি নেয়া যাবে না।
পূর্বনির্ধারিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ১০ মে থেকে একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশনা দিয়ে ভর্তি নীতিমালা জারি করা হয়েছিল। কিন্তু করোনা ভাইরাস সংক্রমণের জন্য ভর্তি প্রক্রিয়া পিছিয়ে যায়। তাই, আগামী ৯ আগস্ট থেকে এ প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে ঘোষণা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।